1. admin@dainikgonosongbad.com : admin : Dr. Md Shahin Molla
  2. g.a.monir87@gmail.com : Golam Azom Monir : Golam Azom Monir
  3. sabuj24news@gmail.com : G m Sabuj : G m Sabuj
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ১৪ কাশিয়ানীতে চিকিৎসার নামে প্রতারনা জরিমানা ১০ হাজার টাকা ঢাকা সাভারে নিখোঁজের চার দিন পর নদীতে ভেসে উঠলো যুবকের মরদেহ ক্রন্দসী ডান্স একাডেমীর ২তম বাৎসরিক অনুষ্ঠান ২০২৪, রোটারী সদনে অনুষ্ঠিত হলো ময়মনসিংহে হিফযুল কোরআন প্রতিযোগিতায় রেঞ্জ ডিআইজি টঙ্গী ইজতেমায় হত্যার প্রতিবাদে আলফাডাঙ্গায় বিক্ষোভ সমাবেশ সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং ডিসি কর্তৃক গালাগাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ময়মনসিংহের বিদায়ী পুলিশ সুপারকে বিদায় সংবর্ধনা ও নবাগত পুলিশ সুপারকে বরণ অনুষ্ঠান সাতক্ষীরার দেবহাটায় মাদক বিরোধী সাইকেল র‌্যালি অনুষ্ঠিত ঢাকা সাভার আশুলিয়ায় চলন্ত প্রাইভেটকারে ডাকাতি, লক্ষাধিক টাকা লুট

কাশিয়ানীতে অবৈধ বেকারীতে সয়লাভ,স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪
  • ১৭৮ বার পঠিত

 

কাশিয়ানীতে অবৈধ বেকারীতে সয়লাভ,স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে মানুষ

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে অবৈধ বেকারীতে সয়লাভ। এ অবৈধ বেকারি গুলোতে তৈরি হচ্ছে মানহীন ও অস্বাস্থ্যকর পণ্য। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বেকারিগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পণ্য তৈরি করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কে নাম বিহিন দ্রব্য বাজারজাত করছে। এসব খেয়ে অনেকেই পেটের পীড়াসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে সাধারন মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন গুলোতে আনাচে-কানাচে অসংখ্য বেকারি গড়ে উঠেছে। সরকারি অনুমতি ছাড়াই মানহীন পণ্য উদপাদন করে বাজারজাত করছে এ সকল বেকারি। এসব বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বিস্কুট, চানাচুর, কেক, পাউরুটি, মিষ্টিসহ নানা মুখরোচক পন্য। স্যাঁতসেঁতে নোংরা পরিবেশে ভেজাল ও নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে বেকারির পণ্যসামগ্রী। বেকারিতে ব্যবহৃত জিনিস গুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। শ্রমিকরা খালি পায়ে এসব পণ্যের পাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছেন। এ সময় তাদের গা থেকে ঘাম ঝরতে দেখা গেছে। আটা-ময়দা প্রক্রিয়াজাত করানো কড়াইগুলোও অপরিষ্কার ও নোংরা।

ডালডা দিয়ে তৈরি করা ক্রিম রাখা পাত্রগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভন ভন করছে। কয়েক দিনের পুরানো তেলেই ভাজা হচ্ছে পন্য সমাগ্রী। ময়লা হাতেই প্যাকেট করা হচ্ছে পন্য। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারিসামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের জাংগাল বাঘিয়া এলাকার তিন্নি বেকারী নামক একটি বেকারীতে কোন প্রকার অনুমোদন ও স্বাস্থ্য সতর্কতা ছাড়াই তৈরি করছে খ্যাদ্য পণ্য। আট থেকে দশ বছরের শিশুদের দিয়ে করাচ্ছেন ভারী কাজ। একই উপজেলার জয়নগর বাজারে নাছির ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টারী বেকারী সহ কয়েকটি বেকারীর মালিকের কাছে বেকারীর চালানোর সরকারী অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে, তারা বলেন আপনাদের কেন কাগজ দেখাতে হয়। আমরা এভাবেই বহু বছর ধরে ব্যবসা করে আসছি।

উপজেলায় বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছেনা অবৈধ বেকারীর পন্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরন। উপজেলার বাইরের বেকারি গুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরদারি নেই বলে জানান অনেকেই।

অবৈধ বেকারির এক কর্মচারীর সাথে কথা বললে সে জানায়, দিনের বেলায় তারা পণ্য উৎপাদন করেন না। রাতে শুরু করে ফজরের আগেই পণ্য উৎপাদন শেষ করেন। সকালে ভ্যানগাড়ী করে দোকান গুলোতে সাপ্লাই করা হয়। কারন জানতে চাইলে বলেন, রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বা অন্য কেউ ঝামেলা করেনা। সকালে বেকারী বন্ধ করে রাখা হয়। কেউ আসলে আমরা বলি পন্য উৎপাদন করা হয়না।

কাশিয়ানী উপজেলাধীন বাঘিয়া গ্রামের তিন্নি বেকারীর সাবেক মালিকের  ওবাদুল ও বর্তমান মালিক লেলিন মোল্লা কাছে বেকারী চালানোর সরকারী অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, আগে ছিল এখন নাই। বহু বছর ধরেই লাইসেন্স ছাড়া বেকারীর ব্যবসা করে আসছি। বেকারীর মাল তৈরী করতে গেলে একটু ময়লা থাকবেই। কি কি কেমিক্যাল ব্যবহার করেন জানতে চাইলে বলতে রাজি হননাই। পরে বলেন, যে সব ব্যবহার করি সব খাবার উপযোগী।

বেকারীর পণ্য কিনে ভোক্তভোগী আশরাফ হোসেন বলেন, আমি বেকারী থেকে বাচ্চাদের জন্য এক প্যাকেট কেক নিয়েছিলাম বাসায় গিয়ে দেখি বেশীর ভাগ কেক নষ্ট ও পঁচা। বাচ্চারা বলছে দুর্গন্ধ। আমি বেকারীতে কেকগুলো নিয়ে আসলে তারা পাল্টে দিতে চায়না। তখন একজন সাংবাদিক আসায় তাতক্ষনাৎ কেক পাল্টে নতুন কেক দেয়। কেকে উৎপাদন ও মেয়াদের কোন তারিখ নেই।

বেকারীর পন্য বিক্রেতা রুহুল আমীন, আমজাত আলী, সাইফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন জানান, তারা গরিব মানুষ, ফুটপাতে বেকারীর পন্য, চা, পান বিক্রি করে সংসার চালান। উৎপাদনের তারিখ দেখার সময় নেই। ক্রেতারা তো আর এসব জিজ্ঞাসা করেন না। প্যাকেট থেকে কোনোমতে তুলে চা বা কলা দিয়ে ওসব বেকারি সামগ্রী কিনে নিচ্ছেন। বেশীর ভাগ সাধারন খেটে খাওয়া মানুষই এখানে আসেন।

কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা(RMO) ডাঃ মোঃ আমিরুল ইসলাম বলেন, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা এসব খাবারসামগ্রী খেলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে। পেট ব্যথা, চামরায় চর্মরোগ, কিডনিতে সমস্যা, খাদ্য নালীতে সমস্যা, শরীর দুর্বলসহ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি রয়েছে।

উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ বুলবুল হোসেন বলেন, কাশিয়ানী উপজেলায় বেশীর ভাগ বেকারীর কোন লাইসেন্স নাই। অনুমোদহীন ভাবে পণ্য উৎপাদন করছে। আমরা এ বেকারী গুলোতে বহুবার অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছি। কয়েকটি বেকারী বন্ধও করেছি। কিন্তু তারা গোপনে রাতের অন্ধকাওে মাল উৎপাদন করে বাজারজাত করছে। ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেছি অভিযান পরিচালনা করার জন্য। কোন বেকারীর বিএসটিআইয়ের অনুমতি নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুজ্জামান জানান, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি নিয়মিত  অভিযান পরিচালনা করছেন। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়া কোন বেকারীর পন্য উৎপাদন বা বাজারজাত করতে পারবেনা। সরকারী লাইসেনন্স নিয়েই ব্যবসা করতে হবে। এ বিষয়ে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর