কাশিয়ানীতে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা
গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে, থমকে আছে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতি।
জানা গেছে, দীর্ঘ ৫ মাস গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদ শুন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে চলছে কোন রকমের দায় সারা কাজ। ফলে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সহস্রাধিক শিক্ষক,অভিভাবক ও সেবা গ্রহিতাগণ।
প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ( ঢাকা) থেকে একজন শিক্ষা অফিসার পদায়নের আদেশ দেওয়া হয়। তিনি গত ১৯ মে যোগদান করেন। যোগদান করেই তিনি সংযুক্তিতে অফিস করছেন রাজধানীর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে। আর সে কারণে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার দিয়ে কোনা রকমে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে কাশিয়ানী শিক্ষা অফিসের কাজ। আর এ সুযোগেই বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঢিমে তালে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,কাশিয়ানী উপজেলায় ১৭১ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুলে শিক্ষকতা কররছন সহস্রাধি:ক শিক্ষক। ১৪ টি ইউনিয়নে ৭ টি ক্লাস্টারে বিভক্ত করা হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ৩০ হাজারের বেশি শিশু লেখা পড়া করছে। গত ৫ মাস ধরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার না থাকায় দৈনন্দিন কাজ ও শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিঘ্নিত হচ্ছে দাপ্তরিক কাজ। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার বিশ্বজিৎ সাহা অফিসের কাজ করতে ব্যাস্ত থাকায় তিনি নিজের ওড়াকান্দি ক্লাস্টারের খোজখবর নিতে পারছেন না। ওই ইউনিয়নের কয়েক হাজার শিশু প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে ওই ইউনিয়নের অভিবাবকরা অশন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
গত ১৮ জানুয়ারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার দাস অবসরজনিত পি আর এলে যান। সেই থেকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিশ্বজিৎ সাহা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই ওড়াকান্দি ক্লাস্টারের স্কুলগুলো দেখ-ভাল করেন। ফলে উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলো মিটার দুরে তার ওই ক্লাস্টার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কার্যক্রমে চরম সমন্বয়হীনতার অভাব দেখা দিচ্ছে। এদিকে, সেবা নিতে আসা শিক্ষক ও কর্মচারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে নিয়মিত পাচ্ছেনা। এতে শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় সেবা গ্রহিতাদের।
কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার র্শতে জানান,ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার শিক্ষকদের কাজ করতে গড়ি মসি করেন এমনকি দীর্ঘ সময় ধরে অফিসে বসিয়ে রাখেন,আমাদের যেদিন উপজেলা অফিসে আসতে হয় সেই দিন বিদ্যালয়ে কোন প্রকার কাজ করতে পারি না।।
এদিকে ৮ মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোবাখখারুল ইসলাম মিজানকে কাশিয়ানী উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে বদলীর আদেশ জারি করেন এবং একই চিঠিতে তাকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্তি দেওয়া হয়।
আদেশ পেয়ে তিনি ১৯ মে কাশিয়ানীতে যোগদান করে ওই দিনই অধিদপ্তরে ফিরে যান। ফলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিশ^জিৎ সাহা আবার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। তাকে অদিদপ্তরে সংযুক্তি প্রধানমন্ত্রীর নিজ জেলার কাশিয়ানী উপজেলায় শিক্ষা অফিসারকে নামমাত্র পদায়ন করায় সেবা গ্রহিতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিশ্বজিৎ সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র হালদার তার মোবাইল ফোনে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।