সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন,প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা প্রদান
শেখ ফারুক হোসেন সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন। জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ১ লাখ টাকা ও ক্রেস্ট দিয়েছে জেলা প্রশাসন। নিজ জেলার মাটিতে সংবর্ধনা পেয়ে উচ্ছ্বসিত নারী ফুটবলাররা। ক্রীড়াঙ্গনের জন্য উর্ববভূমি সাতক্ষীরা জেলার মাটি। ক্রিকেটে মুস্তাফিজ ও সৌম্য,দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তারসহ ক্রীড়াঙ্গনের অনেক তারকার বাড়ি সাতক্ষীরায়। জাতীয় নারী দলের ক্যাপ্টেন ও দুই ডিফেন্ডারের বাড়িও সাতক্ষীরায়।
দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বৃহস্পতিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। সংবর্ধনা পেয়ে খুশি মাছুরা ও প্রথমবারের মতো সাফজয়ী ফুটবল দলের সদস্য আফঈদা খন্দকর প্রান্তি। এপ্রসঙ্গে জাতীয় নারী ফুটবল দলের ডিফেন্ডার মাছুরা খাতুন বলেন,‘‘ আমরা যখন খেলায় জিতি,তখন এমন সংবর্ধনা পেয়ে খুব খুশি হই।’’ আফঈদা খাতুন প্রান্তি বলেন,‘‘ আমরা আগামীতে আরও ভালো করতে চাই,এর জন্য সাতক্ষীরা তথা দেশবাসির কাছে দোয়া চাই। আমরা কঠোর পরিশ্রম করি,যাতে সাতক্ষীরা তথা দেশকে উচুতে নিয়ে যেতে পারি। আমাদের এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ’’ নতুন মেয়েদের ক্রীড়াঙ্গনে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা না থাকায় সংবর্ধনা সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘ সাতক্ষীরায় অনেকে আছেন,যারা জাতীয় পর্যায়ে খেলছেন। এখানে অনেক প্রতিভা আছে,কিন্তু পরিচর্যার অভাবে ঝরে যাচ্ছে। মাসুরা ও আমার কোচ আকবার স্যার মারা গেছেন। প্রান্তিকে তুলে এনেছেন তার বাবা। বর্তমানে সাতক্ষীরায় মেয়েদের তুলে এনে খেলোয়াড় বানানোর কোন চেষ্টা নেই। স্টেডিয়ামে মেয়েদের টুর্নামেন্ট বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই।
ভালো খেললে আমরা সংবর্ধনা পাব,কিন্তু নতুন খেলোয়াড় উঠে আসার পরিবেশ থাকবেনা,এটা আমরা চাইনা। ’’ সাতক্ষীরার নারী খেলোয়াড়দের সর্বাত্বক সহযোগীতার আশ^াস পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম মুনিরের। তিনি বলেন, ‘‘ সাতক্ষীরার মাছুরা,প্রান্তি ও সাবিনা তাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে শুধু দেশে নয়,বিশ^কে আলোকিত করেছে। তাদের শুধু সংবর্ধনা দিলেই হবেনা,জেলার খেলোয়াড় তৈরিতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। সাতক্ষীরায় ১০০ জনেরও বেশি খেলোয়াড় রয়েছেন,যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করছেন। স্থানীয়ভাবে ক্রীড়াক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে জেলা পুলিশ আন্তরিক রয়েছে।’’ সাফজয়ী তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা দিতে পেরে জেলা প্রশাসন গর্বিত বলে জানান জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। তিনি বলেন,‘‘এই তিন নারী ফুটবলার সাতক্ষীরাকে গৌরান্বিত করেছে। তাদেরকে সংবর্ধনা দিতে পেরে জেলা প্রশাসন গর্বিত। তাদের কৃতিত্ব একদিনে আসেনি। অনেক ত্যাগ ও পরিশ্রমের ফলে তারা এ জায়গায় পৌছাতে পেরেছে। একজন দামী খেলোয়াড় দেশের সম্পদ,ক্রীড়াঙ্গনের সম্পদ। তাদের উৎসাহিত করা সকলের দায়িত্ব। ’’ তবে সাতক্ষীরার ক্রীড়া সংগঠক তাইজুল ইসলাম রিপন জানান,সাতক্ষীরা থেকে আরও খেলোয়াড় তৈরিতে দরকার সরকারি-বেসরকারি পৃষ্টপোষকতা। তিনি বলেন, ‘‘ সরকারি-বেসরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে সাতক্ষীরা থেকে আরও অনেক খেলোয়াড় উঠে আসবে।