রেজুয়ান হাসান জয়, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি: বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, কবি হেলাল হাফিজ আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময় লাইনটি যার কবিতায় শ্লোগানের মতো উচ্চারিত হয়েছে, তিনি শুধু একজন কবি নন, বরং এক প্রজন্মের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।জীবন ও সাহিত্যযাত্রা,হেলাল হাফিজ ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার কবিতাগুলো ছিল স্বাধীনতার আন্দোলনের সঙ্গী। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ তাকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। বইটির প্রতিটি কবিতা যেন বাংলার আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি। এখন যৌবন যার কবিতার শক্তি,তার লেখা এখন যৌবন যার’ কবিতাটি বাঙালি ছাত্র-যুবাদের মধ্যে বিপ্লবের অনুপ্রেরণা হিসেবে জায়গা করে নেয়। এই কবিতায় তিনি মিছিলে যাওয়ার মাধ্যমে সমাজ বদলের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার শব্দের জোর ও কাব্যের অন্তর্নিহিত শক্তি তাকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।প্রাপ্তি ও স্বীকৃতি,হেলাল হাফিজ একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। যদিও তার কবিতার সংখ্যা সীমিত, তার প্রতিটি কবিতা একেকটি জীবন্ত চিত্রকল্প। তিনি এক কথায় বাংলা সাহিত্যের ‘রোমান্টিক বিপ্লবের কবি’।বিদায়ের ক্ষণে,১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে তার প্রয়াণ বাংলা সাহিত্যজগতে এক শূন্যতা তৈরি করল। নেত্রকোনা তথা পুরো বাংলাদেশ হারাল এক প্রকৃত সাহিত্যিক ও বিপ্লবী চিন্তার পথপ্রদর্শককে। তার সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে তিনি চিরকাল আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।শেষ কথা,হেলাল হাফিজ বলেছিলেন, মৃত্যুর কাছে হেরে যাবার আগেই আমার কবিতা গাইবে বিজয়ের গান। তার কবিতাগুলো আমাদের মিছিল, সংগ্রাম ও স্বপ্নে চিরকাল অনুপ্রেরণা জোগাবে। বিদায়, কবি!