নেত্রকোণায় উজান থেকে নেমে আসা ঢলে চারটি উপজেলায় ইতিমধ্যে বন্যার কারণে ১৮৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর মধ্যে দুর্গাপুর ৬২, পূর্বধলা ১১, কলমাকান্দা ৯৩ ও সদরে ২০টি। আজ রবিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইমদাদুল হক।
টানা বৃষ্টিতে নেত্রকোনার বৃদ্ধি পেয়েছে কংস, সোমেশ্বরী ও উপদাখালী সহ বেশ কিছু নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে দুপুর ২ টায় কংস নদের পানি বিপদসীমায় ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত। সোমেশ্বরী নদীর পানি দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং অবধা খালি নদীর পানি বিপদ সীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বাড়ায় কংস নদের তীরবর্তী গ্রামগুলো ইতিমধ্যে প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানি ঢুকতে শুরু করেছে নতুন নতুন গ্রামে।
পানি বাড়ায় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে পূর্বধলার নাটেরকোণার প্রায় ৭ কিলোমিটা বেরীবাঁধ। ইতিমধ্যে বাঁধের অনেকাংশই পানি ছই ছুঁই করছে। স্থানীয়রা বস্তা ও মাটি ফেলে কোন রকমের টিকিয়ে রেখেছে বাঁধটি। দুপুর দুইটার পর স্থানীয়দের পাশাপাশি আনসার সদস্যাও অংশ নেয়। স্থানীয়রা বলছেন কোন কারণে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা ভেঙে গেলে পুরো পূর্বধলা উপজেলা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে দুর্গাপুর উপজেলার প্রায় পাঁচটি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়নের পানিবন্দীর সংখ্যাই বাড়ছে। ইতিমধ্যে উপজেলাটিতে ৬৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ মোট ৭২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এই দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র বলছে বাংলাদেশের ইতিহাসে নেত্রকোনা জেলার সর্বোচ্চ পরিমানে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল ৯ টার পর থেকে আজ রবিবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর উপজেলার জারিয়াজানজাইল নামক স্টেশনে ৩০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সর্বশেষ ৭২ ঘন্টায় (৩ দিনে) এই স্টেশনে ৭৫৮ (২০০ + ২৫০ + ৩০৮) মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে দেশের অভ্যন্তরে ৩ দিনে ৭৫৮ মিলিমিটার পরিমাণ বৃষ্টিপাত সম্ভবত আর কোন জেলায় হয়নি।
এদিকে বন্যাত্রদের সহযোগিতায় ইতিমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। তবে এলাকাগুলোতে এখনো সংকট রয়েছে বিশুদ্ধ পানি সহ ত্রান সহায়তার।
দুর্গাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলের পানিতে উপজেলার কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম তলিয়ে গেছে।