রাজ রোস্তম স্টাফ রিপোর্টার ঢাকাঃ ঢাকা সাভার দুর্জয় তারুণ্য দুর্নীতি রুখবেই’’ শীর্ষক শ্লোগানে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সাভারে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালন করেছে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সাভার। কর্মসূচির মধ্যেছিল দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণা, র্যালি, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ক্যাম্পেইন ও আলোচনা সভা। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে সাভার থানা রোডে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের র্যালি ও মানববন্ধন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সাভার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: জহিরুল ইসলাম এবং সনাক সভাপতি অধ্যাপক দীপক কুমার রায়। এ সময় সনাক সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, শ্রাবন্তী ঘোষ, সনাক, এসিজি ও ইয়েস সদস্যবৃন্দ, এনজিও ও গণমাধ্যম প্রতিনিধি এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে তাদের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী একটি বিশাল র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এম. এম. চাকলাদার মহিলা ডিগ্রী কলেজে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে কলেজ মিলনায়তনে সনাক সভাপতি অধ্যাপক দীপক কুমার রায়ের সভাপতিত্বে ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ শীষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক, তরুণ শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, উন্নয়ন ও মানবাধিকারকর্মী এবং ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশা শ্রেণির মানুষ অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০২৪ উপলক্ষে টিআইবি’র ধারণাপত্র পাঠ করেন সনাক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আখম সিরাজুল ইসলাম। তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য টিআইবি’র ১৪টি সুপারিশ উপস্থাপন করেন। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হল, দুদকের জবাবদিহি নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ; দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংগঠনসমূহ যাতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে পারে, তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরাসহ উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রশাসনিক হয়রানি রোধ; বিচার বিভাগের নিয়োগ, পদায়ন, বদলিসহ বিচারিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ, অবাধ তথ্যপ্রবাহের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি ভিন্নমত ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিপন্থী নজরদারিভিত্তিক ভীতিকর পরিবেশ যেন আবার ফিরে না আসে সে ব্যবস্থা গ্রহণ। সভায় আলোচকগণ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রকৃত চেতনার আলোকে দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আলোচনায় বক্তারা দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন ও জনগণের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ফাঁকা বুলির সংস্কৃতি পরিহার করে সকল প্রকার-বিশেষ করে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির বিচারহীনতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবী জানান। দেশের পাচারকৃত অর্থ ফেরৎ আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি দেশের আভ্যন্তরীন দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, ঋণ খেলাপি ও ব্যাংকিং খাতে নজিরবিহীন আর্থিক কেলেঙ্কারীর সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করারও দাবী জানান তারা। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী সদস্যগণ ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে একসাথে’ শ্লোগানের সমর্থনে সনাক পরিচালিত গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করে কর্মসূচির প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রকৃত চেতনার আলোকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।