গোপালগঞ্জে বশেমুরবিপ্রবি-র ভাইস চ্যান্সেলর ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের পদত্যাগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যন্সেলর অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামচুল আলম পদত্যাগ করেছেন। এ ছাড়া শিক্ষক-কর্মকার্তাসহ ছয় জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চলাকালে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে বাধ্য করা, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে ও শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষে মিছিল দেওয়ার অভিযোগে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ২য় তলায় ভিসির রুমে অবস্থান নিয়ে ভিসির পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন শুরু করে এবং পদত্যাগে চাপ দিতে থাকে। এ সময় শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ভাইস চ্যন্সেলর। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে তিনি পদত্যাগ করেন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের চাপে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামচুল আলম পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন।
এছাড়াও, বাংলা বিভাগের শিক্ষক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা, সহকারী রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম হীরা, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক এমদাদুল হক সোহাগ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষক সোলাইমান হোসেন মিন্টু, প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ তারেক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মো. ইমন হোসন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের জন্য পুলিশ প্রশাসন দিয়ে বাধ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুদণ্ডহীন প্রশাসন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৭ আগস্ট শিক্ষার্থীরা ১৫ দফার দাবি জানান। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ছিল শিক্ষার্থীদের ১৫ দফা বাস্তয়নের শেষ সময়। এ সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দেওয়া ১৫ দফা দাবির কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আজ বেলা ৩টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ ও ওই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অব্যাহতির দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে উপাচার্য একিউএম মাহবুব ওই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অব্যাহতির দিয়ে নিজে পদত্যাগ করেন।
উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের পদত্যাগে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাদমান সাকিব বলেন, ‘আমরা লেজুরভিত্তিক রাজনৈতিক দলের প্রশাসন চাই না। আমরা নিরপেক্ষ প্রশাসন চাই। যারা সবসময় আমাদের সহযোগিতা করবে। শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে। পদ হারানের ভয়ে নিজের দায়িত্ব ভুলে যাবে, এমন প্রশাসন আমরা চাইনি। আমরা নতুন করে নিরপেক্ষ প্রশাসন দাবি করি।’
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হলে ভাইস-চ্যান্সেলরসহ অনেকে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের পদত্যাগের দাবি তুলছেন শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগরসহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেছেন।