স্টাফ রিপোর্টার: গোপালগঞ্জে গ্রাম্য সালিশে ছেলেকে চুরির অপবাদে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করায় এবং এলাকাবাসীর অপবাদ সইতে না পেরে খুব ও অপমানে বাবার আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
নিহতের অমল বর (৬০) ঘটনার দুই দিন পরে গাছের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে পাস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার সকালে কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া ইউনিয়নের রাহুথড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত অমল বর ওই গ্রামের মৃত হরিপদ বরের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, গত কয়েকদিন আগে ওই গ্রামের মৃত কমল রায়ের স্ত্রীর একটি বৈদ্যুতিক মোটর চুরি হয়। চুরির ঘটনায় একই গ্রামের অমল বরের ছেলে সুজয় বর ও বাবুল রায়ের ছেলে দিগন্ত রায়কে সন্দেহ করা হয়।
পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নিত্য মজুমদারের উদ্যোগে গত শনিবার বিকালে রাহুথড় উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে এক গ্রাম্য সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে ওই দুই যুবককে চুরির দায়ে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন স্থানীয়রা। জরিমানার টাকা জোগাড় করা নিয়ে সুজয় বরের দরিদ্র পরিবারে চরম ঝামেলায় পড়তে হয়। এছাড়া এলাকাবাসী সুজয় বরের পরিবার নিয়ে নানা ধরনের কটূক্তি করতে থাকে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে অনেকেই চোরের বাবা বলে তাকে আখ্যায়িত করত এতে ক্ষোভ ও অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়ির পাশে একটি ভিটায় গাছের সাথে গলায় ফাঁস নিয়ে সুজয় বরের বাবা অমল বর আত্মহত্যা করেন।
পরে স্থানীয়রা মরদেহ ঝুলতে দেখে নিহতের পরিবারের লোকজনদের খবর দেয়। তারা এসে দেখে নিহতের লাশ গাছে ঝুলছে। পরে কাশিয়ানী থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।
কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য নরোত্তম সিকদার ওই শালিশে ছিলেন। তিনি বলেন, চুরির বিষয়টি ওই দুই যুবক স্বীকার করেছে। এ ছাড়া এলাকায় আগের একটি চুরির কথাও তারা স্বীকার করেছে। যে জন্য শালিশকারীরা তাদের জরিমানা করেন।
কাশিয়ানী থানার ওসি মো: শফিউদ্দিন খান বাংলা ট্রিবিউন কে বলেন, গাছ থেকে বৃদ্ধের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে আত্মহত্যা কি কারণে করেছে জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় কাশিয়ানী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।