স্টার্ফ রিপোর্টারঃ শেখ মোঃ ইমরান: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্ব্যবহার, কটুক্তি ও হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউএনও সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সাকিব সরদার নামে এক ভূক্তভোগী অভিযোগ দিয়েছেন। ওই লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ফুকরা গ্রামের বাসিন্দা সাকিব সৌদিআরব যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে ভোটার হওয়ার জন্য গত এক মাস আগে অনলাইনে আবেদন করেন।
সেই আবেদন ফরম, ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন সনদ, অঙ্গীকারনামা, পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ব্লাড পরীক্ষার রিপোর্ট, ট্যাক্স পরিশোধের ডকুমেন্ট, বিদ্যুৎ বিলের কপি ও চেয়ারম্যানের নাগরিকত্বের সনদসহ নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসুর কাছে জমা দেন। এ সময় নির্বাচন কর্মকর্তা যাচাইয়ের জন্য সাকিবের কাছে তার নাম ও বয়স জেনে আবেদন ফাইলে ‘লাল দাগ’ দিয়ে বাতিল করে দেন।
পরবর্তীতে গত ১৩ নভেম্বর সাকিব পুনরায় আবেদন ফরমসহ একই কাগজপত্র নতুন করে নিয়ে ওই কর্মকর্তার কাছে যান। তিনি সাকিবকে দেখেই বলেন, ‘তোমার বয়স হয়নি। তুমি কম্পিউটারে জাল কাগজপত্র তৈরী করে নিয়ে এসেছো। আমি শুধু কাগজপত্র দেখে যাচাই করি না। ফেস দেখেও বয়স যাচাই করি।’ এক পর্যায় তিনি সাকিবকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে অসদাচরণ করেন ও ধমক দিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। শুধু সাকিব সরদারই নয়, কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে গিয়ে এমন হয়রানীর শিকার হয়েছেন অনেক সেবাপ্রত্যাশী। প্রতিদিনই সেবাপ্রত্যাশীদের সাথে নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসুর ঘটছে বাকবিতন্ডা। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল সংশোধন, ভোটার স্থানান্তর, নতুন ভোটার হওয়াসহ অন্যান্য সেবাপ্রত্যাশীদের অহেতুক হয়রানী করেন নির্বাচন কর্মকর্তা অনিমেষ কুমার বসু। নিজেকে সৎ ও নীতিবান কর্মকর্তা ভেবে ‘বৈধ’ কাগজপত্রকে অবৈধ বলে বাতিল করে দেন। তিনি নিজের ইচ্ছামতো নতুন ভোটারের আবেদনপত্র সপ্তাহে একদিন জমা নেন। এতে দুর-দুরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। বছরের পর বছর অভিযোগ পড়ে থাকলেও, সেবাপ্রত্যাশীরা অফিসে গিয়ে খোঁজ না নিলে তিনি ওই বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তে যান না। এভাবে অফিসে দীর্ঘদিন ধরে অসংখ্য তদন্ত পড়ে আছে। নির্বাচন কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতায় সময়মতো আবেদন করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্তি হতে না পেরে বিদেশ যেতে পারছেন না অনেক যুবক। নির্বাচন কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ সেবাপ্রত্যাশীরা। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে বিগত সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশে প্রিজাইডিং, সহকারি প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া ও এসব কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ আচরণের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার কার্যালয় গেলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় দিতেই রেগে যান। তিনি বলেন, ‘আমার এখানে এসে সাংবাদিক পরিচয় দিবেন না। আমি অনিয়ম-দুর্নীতি করি না। আমি সাংবাদিকদের ভয় পাই না। আমি আপনাদের কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি না। আমি আমার কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি করবো।’